খুলনা মহানগরীর সকল ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। এসব ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির সংকেত সম্পর্কে অধিকাংশ নাগরিক অবগত রয়েছেন।
খুলনায় পুরাতন এ সব ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি নব্বই দশকেরও আগে মহানগরীতে স্থপনা করা হয়। বর্তমানে সববাতি অকার্যকর ও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
তাছাড়া দেখা যায়, মহানগরীর শিববাড়ী মোড় ও পাওয়ার হাউস মোড়ে দু’টি ট্রাফিক সংকেত বাতি দায়সারাভাবে চালু আছে। কিছুদিন পরপর তা অকার্যকর অবস্থায় পড়ে থাকছে।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনা রোধের পাশাপাশি যানজট নিরসনে ১৯৮৭ সালের দিকে মহানগরের ১৬টি মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি স্থাপনা করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে দৌলতপুর, নতুন রাস্তা, জোড়াগেট, শিববাড়ী মোড়, ডাকবাংলো, পাওয়ার হাউস মোড়, রয়্যাল মোড়, পিকচার প্যালেস, সদর থানা, পিটিআই, ধর্মসভা, ময়লাপোতা ও ফেরিঘাট মোড়, সদর হাসপাতালের সামনে, সার্কিট হাউসের পাশে, হাজী মুহসীন সড়ক।
আরও পড়ুন: ট্রাফিক সিগন্যাল অব্যবস্থাপনার প্রতিবেদন চেয়েছে হাইকোর্ট
তবে এর মধ্যে ২০০৫ সালের মধ্যে সবকটি বাতি অকার্যকর হয়ে যায়। বাতিগুলো মেরামতের উপযোগী না থাকায় কেসিসি নতুন করে আর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। মূলত এ সব ট্রাফিক সিগন্যাল হলুদ, সবুজ, রঙের বাতি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। এতে করে দ্বায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ বেগ পেতে হয়। মাঝে মধ্যে রাতের বেলায় ইলেকট্রনিক সিগন্যাল লাঠি ব্যাবহার করতে দেখলেও বেশির ভাগ সময়ে হাতে লাঠি আর বাশি নিয়ে যানজট নিরসনের দায়িত্বে দেখা যায় এসব ট্রাফিক সদস্যদের। এতে করে নগরীতে বাড়ছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে পথচারি ও যানবহনের ঝুকিঁ।
খুলনা শিববাড়ী মোড় এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বলেন, ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি সব বিকল অবস্থায় রয়েছে, আমরা বাশি, লাঠি ও মাঝের মধ্যে ইলেকট্রনিক সিগন্যাল লাঠি ব্যবহার ও হাতের ইশারায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছি। অনেক সময়ে আমাদের নিজেদের ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে, তারপরও দ্বায়িত্ব পালন করতে হয়। তবে ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি সচল হলে যানজট নিরসনের জন্য দায়িত্ব পালন অনেকটা সহজ ও অনেক দুর্ঘটনার থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: রূপগঞ্জে সড়কের বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী
মহানগরীর মাহেন্দ্র চালক আজমির মোল্লা বলেন, দেশ এখন আধুনিক হচ্ছে। তবে খুলনায় ট্রাফিক সংকেত বাতি এখনও পুরাতন, নষ্ট জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তাছাড়া অনেক সময়ে গাড়ি নিয়ে সড়কে চলাচলের সময়ে ট্রাফিক পুলিশের হাতের সিগন্যাল চোখে পড়েনা। যে কারণে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে রাতের বেলায় তো চোখেই পড়ে না। দ্রুত এ সব বাতি মেরামত করা বা নতুন করে ট্রাফিক বাতি স্থাপন করার জন্য জোর দাবি জানান তিনি।
খুলনা সিটি কর্পেরেশনের প্যানেল মেয়র-১ আমিনুল ইসলাম (মুন্না) বলেন, ‘ট্রাফিক সংকেত বাতি বিকল আছে, আমি নিজেও বিষয়টি লক্ষ্য করেছি। তাছাড়া এতে করে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে সমস্যা হচ্ছে। মেয়রের সাথে এ বিষয়ে কথা বলে দ্রুত একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ডিসি মোহাম্মাদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘খুলনা একটি সুন্দর ও আধুনিক শহর। অথচ ট্রাফিক সংকেত বাতি এখনও জড়াজীর্ণ। অনেক সময়ে আমাদের পুলিশ সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত গাড়ির সামনে দাড়িয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে। তাছাড়া আমরা বেশ কয়েকবার খুলনা সিটি কর্পেরেশনকে চিঠি দিয়েছি। তবে এখনও কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। দ্রুত এসব ট্রাফিক সংকেত বাতি সংস্কার বা নতুন বাতি স্থাপন করার জন্য অনুরোধ করছি।’